আকাশ রহমান,স্টাফ রিপোর্টারঃ মুখ মাস্কে ঢাকা, তবু স্কুলে বন্ধুদের সামনাসামনি দেখার খুশি জানান দিল শিক্ষার্থীদের চোখ। আজ রবিবার প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিকক্ষে ক্লাস চালু হওয়ার প্রথম দিনে করোনার সংশয় কাটিয়ে সকল প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষার্থীরা এসেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঢোকার সময় হাতে স্যানিটাইজ়ার, থার্মাল চেকিংয়ের ব্যবস্থাও ছিল থানার বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। করোনা-কাঁটাকে সরিয়ে প্রায় ১৮ মাস পরে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রতিষ্ঠান খোলেছে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি সংখ্যা তুলনামূলক কম হওয়ার পিছনে করোনাকে ‘দায়ী’ করেছেন অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা।

তাঁরা মনে করছেন, অনেক দিন পরে প্রতিষ্ঠান খুলেছে। করোনা-পরিস্থিতিও পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। ফলে, অনেক অভিভাবক, শিক্ষার্থীদের মনেও সংশয় রয়েছে। ঠাকুরগাঁও সদর শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ে গুলোকে কোভিড-বিধি প্রচার করা, স্কুল চলাকালীন নির্দিষ্ট সময় জীবাণুমুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় দেখা দেওয়া পরিকাঠামোগত ত্রুটিগুলিও সারাতে বলা হয়েছে। কোনও শিক্ষার্থী মাস্ক না পড়ে বিদ্যালয়ে আসলে, সে যাতে বিদ্যালয় থেকে মাস্ক পায়, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ রুহিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে মাস্ক তুলে দেন শিক্ষকেরা। রুহিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মান্নান বলেন, ‘‘প্রায় ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়েছে।

বিধি নিষেধ মানা হয়েছে।’’ এ দীর্ঘ ১৮ মাস পর শিক্ষার্থীদে পদচারনায় মুখরিত বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। মহান আল্লাহতায়ালার দরবারে শুকরিয়া আদায় করি। ঠাকুরগাঁও সদরের রুহিয়া থানাধীন বিদ্যালয় গুলিতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। অন্য সময়ের মতো দল বেঁধে সাইকেলে করে স্কুল যাওয়ার চেনা দৃশ্যও দেখা গেছে। মুজামন্ডল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২৩৬ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়েছে। প্রধান শিক্ষিক মজলুম পারভেজ বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য-বিধি মেনেই ক্লাস চলছে।’’ রুহিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম জানান, করোনা ভাইরাসের ভয়ে কিছু অভিভাবক ছেলেমেয়েদের প্রথম দিন স্কুলে পাঠাননি।

আশা করি এই পরিস্থিতি কেটে যাবে। রুহিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী রুনার কথায়, “সাইকেল চালিয়ে স্কুলে এসেছি। এতদিন পরে স্কুলে আসার মজাটা নষ্ট করতে চাইনি।’’ একই সুর ওই বিদ্যালয়ের তৃষা, হাজরা, নায়িমদের গলায়। তারা বলে, “বাড়িতে থেকে হাঁফিয়ে উঠেছিলাম। সে জন্য বিদ্যালয়ে ছুটে এসেছি।’’ রুহিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের সিয়াম, জনি, মিলনও বিদ্যালয়ে এসে খুশি। আবার শিক্ষার্থীদের একাংশের গলায় আক্ষেপও ঝরে পড়ছে। একই ক্লাসে দূরে দূরে বসা, ভাল লাগেনি তাদের। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দাবি, বিদ্যালয় কেবল খুলেছে।

পুরোদমে শুরু হলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসবে। কোনও রকম সংশয় না রেখে অভিভাবকেরা শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠান, চাইছেন তাঁরা। সদরের রুহিয়া ক্লাস্টার পরিদর্শক (প্রাথমিক) সহকারী শিক্ষা অফিসার মোকাদ্দেস ইবনে সালাম বলেন, “বিকেল পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, ৫0 শতাংশ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে এসেছে। আশা করি, আগামী দিনগুলোতে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের আসবে। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা কানে আসেনি।